প্রবাসীদের ই-পাসপোর্টে থাকছে অবাক করা সব সুবিধা!এক নজরে দেখে নিন

আগামী জুলাই মাসের প্রথম দিন থেকেই ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) দেওয়া শুরু হবে। এজন্য এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীতে ১১৯টি দেশের নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করছে।

এবার ওই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশও। সূত্র জানায়, বর্তমান পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতোই ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে।

তবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুটি পাতা আছে, তা ই-পাসপোর্টে থাকবে না। সেখানে পালিমারের তৈরি একটি কার্ড থাকবে। এই কার্ডে সংরক্ষিত চিপে পাসপোর্ট বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।

পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডাটা পেজে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। এই ই-পাসপোর্টের মেয়াদ বয়স অনুপাতে ৫ ও ১০ বছর হবে।

এ ছাড়া ই-পাসপোর্ট চালু হলেই এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হবে না বলে জানায় পাসপোর্ট অধিদফতর। তবে নতুন করে কাউকে এমআরপি পাসপোর্ট দেয়া হবে না।

যাদের এমআরপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা নবায়ন করতে গেলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে এমআরপি পাসপোর্ট তুলে নেয়া হবে।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে দ্রুততম সময়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট প্রদানের ঘোষণা দেন।

এরপর প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিআইপি) তৈরি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সব কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ করে পাসপোর্ট ও বহির্গমন অধিদফতর। সূত্র আরও জানায়, বর্তমান এমআরপি ব্যবস্থা থেকে ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থায় উত্তরণ ঘটলে বাংলাদেশিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঝামেলাবিহীনভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন।

কারণ ই-পাসপোর্ট এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে বিদ্যমান বইয়ের সঙ্গে একটি ডিজিটাল পাতা (ডাটা পেজ) জুড়ে দেয়া হবে। ওই ডিজিটাল পাতায় উন্নতমানের মেশিন রিডেবল চিপ বসানো থাকবে।

এতে সংরক্ষিত থাকবে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য। ডাটা পেজে থাকবে পাসপোর্টধারীর তিন ধরনের ছবি, ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশও। ভ্রমণকালে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ কম্পিউটারের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য-উপাত্ত জানতে পারবেন।

তাছাড়া সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বিভিন্ন বিমানবন্দরে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। ঝামেলাহীনভাবে ই-গেট ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করা যাবে।

সূত্র বলছে, বর্তমানে পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে যে ধরনের এমআরপি বই দেয়া হচ্ছে সেগুলো জাল করা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এ ধরনের কয়েকটি জাল এমআরপি ধরাও পড়েছে।

বিদ্যমান এমআরপিতে ৩৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকলেও এর বেশিরভাগই জাল করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু ই-পাসপোর্ট বইয়ের পলিকার্বোনেট ডেটা পেজ জাল করা সম্ভব হবে না। এ ছাড়া ই-পাসপোর্টে থাকছে ৪২টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য।

‘ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে বিদেশে যাওয়া বন্ধ হবে’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, জুলাই মাসের শেষের দিকে ই-পাসপোর্ট ও ই-গেট দৃশ্যমান হবে।আর এটা হলে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে বিদেশে যাওয়া বন্ধ হবে।

শনিবার (২২ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা জানান। আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, আমরা আড়াই কোটি মানুষকে এমআরপি দিয়েছি।

এখন আমরা ই-পাসপোর্ট, ই-ভিসা ও ই-গেটে যাবো। আগামী জুলাই মাসের শেষে দিকে ই-পাসপোর্ট ও ই-গেট দৃশ্যমান হবে। এটা হলে একজন আরেকজনের কাগজপত্র দেখিয়ে বিদেশে যেতে পারবে না। ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে বিদেশে যাওয়া বন্ধ হবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হবে।

স্বরাষ্ট্রসন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সাসটেইনেবল ডেভেলবপমেন্ট চাই। এর জন্য স্থায়ী শান্তি দরকার। স্থায়ী শান্তির জন্য স্থায়ী নিরাপত্তা দরকার। আর এই স্থায়ী নিরাপত্তার জন্য আমরা নিরাপত্তা বিভাগকে পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, ইন্ডস্ট্রিয়াল পুলিশ, নৌ পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশকে ঢেলে সাজিয়েছি, শক্তিশালী করেছি। জঙ্গি দমনে আমরা সফল হয়েছি। মাদক দমনে আমরা সফলতা দেখিয়েছি।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশন শুরু হয়।